Titing PDF Download - টিটিং বইটি জনপ্রিয় লেখক মুহাম্মদ জাফর ইকবাল এর নতুন বই। এটি একটি শিশু-কিশোর ভৌতিক বই। মুহাম্মদ জাফর ইকবাল সাইন্স ফিকশন লেখক হিসেবে সমধিক পরিচিত হলেও তিনি অনেক কিশোর উপন্যাস রচনা করেছেন। তিনি শিশু-কিশোরদের একজন অত্যন্ত জনপ্রিয় লেখক। বইমেলা ২০২৩ এ কিশোর উপন্যাস টিটিং বইটি প্রকাশ করেছে সুবর্ণ প্রকাশনী। ২০২২ সালে মুহাম্মদ জাফর ইকবাল আমার ডেঞ্জারাস মামী সহ আমি পরামানব, ইলেক্ট্রনিক্সের প্রথম পাঠ, আহা টুনটুনি উহু ছোটাচ্চু বই গুলো প্রকাশ করেছে।
দেখে নিনঃ
বইয়ের নামঃ টিটিং
লেখকঃ মুহাম্মদ জাফর ইকবাল
টিটিং বইটি টিটিং নামের একটি ভূতের বাচ্চাকে নিয়ে লেখা হয়েছে। এটি একটি ভূতের বাচ্চার গল্প। নাম তার টিটিং। ভূতের বাচ্চাদেরও স্কুল আছে। তবে সে স্কুলে ভূতের বাচ্চাদের আমাদের মতো পড়ালেখা শেখানো হয় না। শেখানো হয় কীভাবে মানুষকে ভয় দেখানো যাবে। টিটিংও সেই স্কুলে যায়। তবে স্কুলের খারাপ ছাত্র সে। কারণ সে মানুষকে ভয় দেখাতে চায় না। বরং মানুষের মতো কথা বলতে চায়। নানারকম গল্প শুনতে ও মানুষের বাচ্চাদের মতো বই পড়তে চায়। তো ভূতের স্কুলের শিক্ষকরা একবার টিটিংদের প্রাকটিক্যাল পরীক্ষা নিতে মানুষের সমাজে নিয়ে যায়। সবাই তারা দেয়াল ফুঁড়ে কোনো না কোনো বাড়িতে ছোট ছেলেমেয়েদের ঘরে ঢুকে পড়ে। তারপর শিশুদের ভয় দেখিয়ে ফিরে আসে। পরীক্ষায় তারা কেউ নব্বই, কেউ পঁচানব্বই আবার কেউ বা একশো নম্বরই পায়। টিটিং যে-ঘরে ঢোকে সেখানে তার আলাপ হয় দুই ভাইবোন তুতুল ও পুতুলের সঙ্গে।
কথায় কথায় তাদের মধ্যে বন্ধুত্বও হয়ে যায়। এরপর ঘটতে থাকে মজার মজার সব ঘটনা।
ছোটদের প্রিয় লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল সে সব মজার কাহিনিই চমৎকার করে বর্ণনা করেছেন ছোট্ট এই বইটিতে । পড়তে শুরু করলে শেষ না করে ওঠা যাবে না। গল্পের সঙ্গে রয়েছে ভূতের বাচ্চাদের কাণ্ডকারখানার ছবিও।
Titing বইয়ের কিছু অংশ
তোমরা কি জানো মানুষের বাচ্চাদের যেরকম স্কুল আছে ভূতের বাচ্চাদেরও ঠিক সেই রকম স্কুল আছে?
তবে মানুষের বাচ্চাদের স্কুলের সাথে ভূতের বাচ্চাদের স্কুলের একটা বড় পার্থক্য আছে। মানুষের বাচ্চারা কখনো স্কুলে যেতে চায় না আর ভূতের বাচ্চারা স্কুলে যাওয়ার জন্য পাগল। কেন পাগল হবে না? ভূতের বাচ্চাদের স্কুলে কোনো লেখাপড়া নাই-তাদের স্কুলে শুধু দুষ্টুমি শেখানো হয়।
যেমন প্রথমেই তাদের গলা ফাটিয়ে চিৎকার করা শেখানো হয়। তুমি যদি তাদের ক্লাসে যাও দেখবে, ভূতের সব বাচ্চা গলা ফাটিয়ে চেঁচাচ্ছে। শুধু যে চেঁচাচ্ছে তাই নয় হাত-পা ছুড়ছে, পা দাপাদাপি করছে, চিৎকার করতে করতে গড়াগড়ি খাচ্ছে, আরো কত কী!
তারপর তাদের শেখানো হয় ভাঙচুর। যতরকম জিনিসপত্র আছে সেগুলো ছুড়ে ফেলতে হয়, ভাঙচুর করতে হয়। হাতের কাছে যা পাওয়া যায় সেগুলোকে গুঁড়োগুঁড়ো করে ফেলতে হয়।
তারপর তাদের শেখানো হয় লাফঝাঁপ আর ধাক্কাধাক্কি। তখন ভূতের বাচ্চারা লাফ দিয়ে ঘরের ভেতর ছোটাছুটি করে, একজন আরেকজনকে ধাক্কা দেয়, মাটিতে ফেলে দেয়, হুটোপুটি করে।
তারপর তাদের শিখতে হয় মুখ ভেংচানো। দাঁত বের করে চোখ উল্টিয়ে তারা একজন আরেকজনকে মুখ ভ্যাংচায়। জিভ বের করে নাক কুঁচকে, মুখ দিয়ে বিচিত্র সব শব্দ করে তারা নানা রকম মুখ ভ্যাংচানো শেখে।
ভূতের বাচ্চারা কেন এগুলো শিখে তুমি জানো? তার কারণ হচ্ছে, ভূতের বাচ্চারা যখন বড় হয় তখন তাদের কাজ হয় মানুষের বাচ্চাদের ভয় দেখানো। অমাবস্যার রাতে যখন ঘুটঘুটে অন্ধকার হয় তখন ভূতের বাচ্চারা মানুষের বাচ্চাদের ভয় দেখাতে আসে। যে ভূতের বাচ্চা যত বেশি বাচ্চাকে ভয় দেখাতে পারে তার তত সুনাম!
এই জন্য ভূতের বাচ্চাদের স্কুলে যেতে খুব ভালো লাগে। সেখানে তারা নানাভাবে মানুষের বাচ্চাদের ভয় দেখাতে শেখে।
সেরকম একটা স্কুলে টিটিং নামে ছোট একটা ভূতের বাচ্চা পড়ত। তার সাথে আরো অনেক ভূতের বাচ্চা পড়ত। তাদের নাম ছিল কিটিংপিটিং, মাং- কাপাংকা, পিংগাচিংগা, ভুংগাভাংগা, ফুটফুটাং, ভুটভূটাং, নিচিংকিচিং, শিটিং- পটিং-সব নাম মনে রাখার দরকার নেই। আমাদের অবশ্য শুধু টিটিং-এর নামটা মনে রাখলেই হবে। কারণ আমাদের গল্পটা টিটিংকে নিয়ে।
অন্য সব ভূতের বাচ্চা স্কুলে যেতে পছন্দ করত কারণ সেখানে সব রকম দুষ্টুমি শেখা যায়, শুধু টিটিং-এর স্কুলে যেতে একটুও ভালো লাগত না, কারণ টিটিং- এর ভালো লাগত শুধু গল্প শুনতে। সে সবসময় গল্প শুনতে চায়। তার আব্বু আর আম্মুর কাছ থেকে টিটিং সব গল্প শুনে ফেলেছে। এমনকি তার নানা-নানি, দাদা-দাদি, চাচা-চাচি, মামা-মামি খালা-খালু, ফুপা-ফুপু সবার কাছ থেকে সেসব গল্প শুনে ফেলেছে। তবু তার মন ভরেনি, সে আরো গল্প শুনতে চায়। কিন্তু এখন আর কারো মাথায় বলার মতো নূতন কোনো গল্প নেই। টিটিং শুধু যে গল্প শুনতে চায় তা নয়, সে ভিন্ন ভিন্ন নানা ধরনের গল্প শুনতে চায়। রূপকথার গল্প, হাসির গল্প, দুঃখের গল্প, বিজ্ঞানের গল্প, অ্যাডভেঞ্চারের গল্প, ডাকাতের গল্প, পশু-পাখির গল্প, সমুদ্রের গল্প, মহাকাশের গল্প—এমন কোনো গল্প নেই যেটা টিটিং শুনতে চায় না! কিন্তু ভূতেরা জানে শুধু এক ধরনের গল্প, সেটা হচ্ছে, কেমন করে তারা মানুষদের ভয় দেখিয়েছে সেই গল্প। সেই একই গল্প আর কত শোনা যায়?
তারপরেও একদিন টিটিং তার আম্মুকে বলল, “আম্মু একটা গল্প বলো।” আম্মু টিটিংকে ধমক দিয়ে বলল, “কি মানুষের মতো কথা বলছিস? ঠিক করে কথা বল।"
ভূতদের সব সময় নাকি সুরে কথা বলতে হয়। টিটিং-এর মোটেও নাকি সুরে কথা বলতে ভালো লাগে না। সে তাই সুযোগ পেলেই মানুষের মতো কথা বলার চেষ্টা করে। আম্মুর ধমক খেয়ে সে নাকি সুরে বলল, “আম্মু এঁকটা গল্প বল প্লিজ।"
আম্মু বলল, “আর কত গল্প বলব? আমরা কি মানুষ নাঁকি যে দিনরাত গল্প বলব, গল্প লিখব, গল্পের বই ছাপাব?”
নোটঃ কপিরাইটের কারণে বইটি Titing PDF ডাউনলোড নাও হতে পারে। সাময়িক এই সমস্যার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। alert-warning
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন