Fera PDF Download - ফেরা বইটি জনপ্রিয় লেখক মুহাম্মদ জাফর ইকবাল এর নতুন বই। এটি একটি মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস। মুহাম্মদ জাফর ইকবাল সাইন্স ফিকশন লেখক হিসেবে সমধিক পরিচিত হলেও তিনি অনেক কিশোর উপন্যাস রচনা করেছেন। তিনি শিশু-কিশোরদের একজন অত্যন্ত জনপ্রিয় লেখক। বইমেলা ২০২৩ এ মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক উপন্যাস ফেরা বইটি প্রকাশ করেছে তাম্রলিপি প্রকাশনী। ২০২২ সালে মুহাম্মদ জাফর ইকবাল আমার ডেঞ্জারাস মামী সহ আমি পরামানব, ইলেক্ট্রনিক্সের প্রথম পাঠ, আহা টুনটুনি উহু ছোটাচ্চু বই গুলো প্রকাশ করেছে।
দেখে নিনঃ
বইয়ের নামঃ ফেরা
লেখকঃ মুহাম্মদ জাফর ইকবাল
ফেরা বইটি একটি মুক্তিযুদ্ধের বই। ফজল আকাশের দিকে তাকাল। সূর্য হেলে পড়ছে। বিকাল শেষ হয়ে অন্ধকার হয়ে গেলে তারা নিশ্চয়ই আক্রমণ করবে। প্রথম প্রথম সম্মুখ যুদ্ধ করার সময় বুকের ভেতর কেমন জানি করতো। ভয় ভয় করতো। কিন্তু একবার যুদ্ধ আরম্ভ হওয়ার পর হঠাৎ করে ভয় কেটে যেতো। মনে হতো এটা একটা খেলা! নিয়ম মেনে শুধু খেলতে হবে। এটা কেন হয় কে জানে? যুদ্ধ শেষ হলে যদি সে বেঁচে থাকে তাহলে কাউকে জিজ্ঞেস করতে হবে।
Fera বইয়ের কিছু অংশ
মেলার মাঠে আজকে একটা মারামারি হয়ে গেল। অবশ্য এটাকে মনে হয় মারামারি বলা ঠিক হবে না, মারামারি হলে দুইজনই একে অন্যকে পিটায় । যখন একজন আরেকজনকে আচ্ছা মতন পিটুনি দেয় আর অন্যজন শুধু পিটুনি খায় তখন সেইটা মারামারি না–সেইটা মনে হয় পিটুনি খাওয়া। আজকে মাঠে সেইটাই হয়েছে, ফজল ধুমসে বজলুকে পিটিয়েছে আর বজলু শুধু পিটুনি খেয়েছে। দুইজন এক ক্লাসে পড়ে, বজলু হচ্ছে ছোটখাটো আর ফজল তার বয়সের তুলনায় ষাঁড়ের মতো বড়, শুধু তাই না–ফজল হচ্ছে একেবারে বাঘের মতন খ্যাপা আর বজলু হচ্ছে ছাগলের বাচ্চার মতো শান্তশিষ্ট। তাই দুইজনে মারামারি শুরু করলে এরকম একটা কিছুই ঘটার কথা।
বজলুর দোষ হচ্ছে, ফুটবল খেলার সময় বলটা পায়ে পেয়ে ফজল কিছু বোঝার আগেই সে টুক করে একটা গোল দিয়ে দিয়েছে। গোল খেয়ে ফজলের মেজাজ গরম, সে হুংকার দিয়ে বলল, “অফসাইড!”
স্কুলের ছেলেরা বিকালে বল নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করে খেলে, সেখানে ফাউল-পেনাল্টি নিয়েই কেউ মাথা ঘামায় না- গোল পোস্টই তৈরি হয়েছে দুইটা আধলা ইট দিয়ে, সেই খেলায় অফসাইড নিয়ে কে মাথা ঘামাবে? অফসাইড হয় কেমন করে সেইটাই কেউ জানে না। তাই বজলু চোখ কপালে তুলে বলল, “অফসাইড? অফসাইড আবার কী?”
ফজল বজলুর বুকে একটা ধাক্কা দিয়ে বলল, “তুই অফসাইড চিনিস না আর ফুটবল খেলতে এসেছিস?”
বজলু পড়ে যেতে যেতে কোনোমতে নিজেকে সামলে নিয়ে বলল, “তুই ধাক্কা দিলি কেন?”
ফজল বলল, “আমার ইচ্ছে হয়েছে তাই দিয়েছি। একশবার দিব। তুই কী করবি?”
বজলু দুর্বল ভাবে বলল, “ভালো হবে না কিন্তু
কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছে। ফজল বাঘের মতো বজলুর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাকে আচ্ছা মতন পিটাতে শুরু করেছে। প্রথমে কেউ মারামারি থামাতে সাহস পায় নাই কিন্তু যখন একটু বেশি বাড়াবাড়ি হতে শুরু করেছে তখন কয়েকজন মিলে মারামারি থামিয়েছে। ততক্ষণে বজলুর ঠোঁট কেটে রক্ত ঝরছে, শার্টের পকেট অর্ধেক খুলে এসেছে। বজলু বেচারা কাঁদতে কাঁদতে বাসায় চলে গেছে।
ফজল তখন বুঝতে পারল কাজটা ঠিক হয় নাই। ফজলের কোনো দোষ নাই—বজলুই কোনোভাবে মারামারি শুরু করেছে এরকম কোনো একটা গল্প তৈরি করা যায় কিনা ফজল সেটা খানিকক্ষণ চিন্তা করে হাল ছেড়ে দিলো। দোষ পুরোপুরি তার, সবার সামনে ঘটনা ঘটেছে এর মাঝে গল্প বানানোর কোনো সুযোগ নাই।
তাই খেলা শেষ হয়ে যাবার পর সবাই বাড়ি চলে গেলেও ফজল মাঠে বসে রইল, সাথে মজা দেখার জন্য নূরুল। ফজল অন্যমনস্ক ভাবে মাঠ থেকে একটা চোরকাঁটা ছিঁড়ে তার গোড়াটা চিবাতে থাকে। নূরুল বলল, “মাঠে বসে বসে ঘাস চিবিয়ে চিবিয়ে খাবি নাকি বাড়ি যাবি?”
ফজল মুখ থেকে চিবিয়ে রাখা চোরকাঁটার গোড়াটা থুঃ করে ফেলে বলল, “তুই যা। আমি পরে যাব।”
“পরে কখন যাবি? অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে।”
ফজল ধমক দিলো, বলল, “বললাম পরে যাব। তুই যা।” ফজলের বাড়ি যাওয়ার কোনো আগ্রহ নাই, তাদের ছোট পাড়ায় সবাই সবাইকে চিনে। বজলুর বাড়ি তাদের দুইটা বাড়ি পরে কাজেই মারপিটের খবর যে এতক্ষণে তার বাড়িতে পৌঁছে গেছে তাতে কোনো সন্দেহ নাই। বাবা যখন খবর পাবেন তখন কেলেংকারি হয়ে যাবে। বাবা স্কুলের হেড মাস্টার, শুধু এই মহল্লার না, আশে পাশে কয়েক মহল্লার একজন সম্মানী মানুষ ।
তার ছেলে হয়ে সে এই রকম মারপিট করে ঘুরে বেড়ালে বাবা তো রাগ হতেই পারেন। তাই ফজল বাড়িতে ফিরে যাওয়ার মতো সাহস করতে পারল না। আরেকটু যখন অন্ধকার হলো তখন ফজলের ছোট ভাই-বোন সজল আর শিরিন মাঠে এসে হাজির হলো। শিরিন মেজো, সজল ছোট।
নোটঃ কপিরাইটের কারণে বইটি Fera PDF ডাউনলোড নাও হতে পারে। সাময়িক এই সমস্যার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। alert-warning
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন