Dr. Kijil Prarambha PDF Download – ডক্টর কিজিল প্রারম্ভ বইটি তরুণ লেখক মাশুদুল হক এর লেখা একটি নতুন বই। এটি একটি সাইন্স ফিকশন উপন্যাস। মাশুদুল হক পেশায় লেখক ও চিকিৎসক। তিনি থ্রিলার, ফ্যান্টাসি ও সায়েন্স-ফিকশন গল্প উপন্যাস ও শিশু-কিশোর সাহিত্য নিয়ে কাজ করছেন। ডক্টর কিজিল প্রারম্ভ বইটি প্রথম প্রকাশিত হয় ২০২২ সালে। বইটি প্রকাশ করেছে আফসার ব্রাদার্স।
দেখে নিনঃ
বইয়ের নামঃ ডক্টর কিজিল প্রারম্ভ
লেখকঃ মাশুদুল হক
সদ্য জুওলজিতে মাস্টার্স শেষ করা হাসান ঘটনাক্রমে পরিচিত হয় প্রখ্যাত বিজ্ঞানী ডক্টর কিবরিয়া জিল্লুর লস্কর ওরফে কিজিলের সাথে। কিজিল মানুষ হিসেবে অদ্ভূত ও খাপছাড়া, বিপজ্জনকও। তার রিসার্চ অ্যাসিটেন্ট হিসেবে যোগ দিয়ে হাসানের শুরু হয় আনকোরা ভিন্ন এক জীবন । সবার চোখের আড়ালে কি ভীষণ সব কাজ করে বেড়াচ্ছে লোকটা সেটা নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা দুরুহ। ডক্টর কিজিল ও তার সহকারীর সেসব বিচিত্র অভিযানে আপনাকে আমন্ত্রণ।
Dr. Kijil Prarambha বইয়ের কিছু অংশ
ডক্টর কিজিলের সাথে আমার পরিচয় পর্বটা বেশ অস্বস্তিকর ছিল। তাই নিতান্ত আপনজন না হলে এই গল্প আমি কারো সাথে করতে চাই না। কিন্ত কিজিল কে নিয়ে লিখতে বসেছি যখন তখন সেটা আর না করে উপায় কী!
তার আগে বলে নেই, এই লেখাটা কেন লিখছি নিজেও জানি না। হতে পারে মানুষ তার অদ্ভুত অভিজ্ঞতা অন্যদের সাথে শেয়ার করতে- সেকারণেই। লেখাটা ডায়রির মতো করে লিখতে পারলে ভালো হতো, কিন্তু ঘটনাগুলাে লিখে রাখবাে সে চিন্তাটা মাথায় অনেকদিন পর আসে, তাই গল্পের মতাে করেই লিখছি।
ড. কিজিলের সাথে পরিচয়ের আগ পর্যন্ত তাকে আমার জানা ছিল না, এমন জ্বলজ্যান্ত এক অদ্ভুতুড়ে মানুষ আমাদের মাঝে ঘাপটি মেরে ছিল সেটা কে ভাবতে পেরেছিল!
গুটিকয়েক লােক যারা তাকে নামে জানে তারাও তাকে চিনতাে ভিন্ন পরিচয়ে, তিনি একজন শখের দাবারু- গ্রান্ডমাস্টার খেতাবটাও তার আছে। অবশ্য এখন আর কোনাে প্রতিযােগিতায় আসেন না, উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত তার বিশাল সম্পত্তি আর পারিবারিক ব্যাবসা দেখাশােনা করেন- অধিকাংশ মানুষের জানার সীমা এতটুকুই তার সম্পর্কে।
লােকে যেটা জানতাে না সেটা হলাে তিনি একাধারে বেশ বড়মাপের জিন প্রকৌশলী, ম্যাথমেটিশিয়ান, পদার্থবিদ আর বায়ােকেমিস্ট- তার বাকি পরিচয়গুলাে তিনি কোনাে এক কারণে সুকৌশলে গােপন করে রেখেছেন।
তাকে রীতিমতাে প্রডিজি বলা চলে, যৌবনের পুরােটা সময় ব্যয় করেছেন হাফ ডজন বিষয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে দেশে-বিদেশে ঘুরে, তার বাপ মারা যাওয়ার পর পরিবারের বাকিদের অনুরােধে তিনি স্থায়ীভাবে দেশে চলে আসেন, তবে পরবর্তীতে তাদের সাথে ঝামেলা হওয়ায় পারিবারিক সম্পত্তির নিজেরটুকু বুঝে নিয়ে আলাদাভাবে একটা কোম্পানি খুলে ব্যবসা শুরু করেন।
বিয়ে করেছিলেন। তবে কোনাে এক কারণে খুব দ্রুতই তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। তাই আত্মীয়স্বজন কেউই তাঁর সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নয়। নিজের কিছু প্রজেক্ট নিয়ে নিভৃতে থাকতে ভালােবাসেন, কেউ ঘটানােরও সাহস পায় না।
বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি যখন জুওলজিতে মাস্টার্স কমপ্লিট করি তখন আমার এক কোর্স টিচারের মুখে প্রথম তার নাম শুনি, বায়ােটেকনলজিতে কিজিলের অবদানস্বরূপ একটা জাতীয় পুরস্কারের জন্য মনােনীত করা হয়।
কিন্তু কোনাে এক কারণে তিনি সেটা প্রত্যাখ্যান করেন, তাঁর অবদান ছিল মাত্র দু’সপ্তাহে ফলবে এমন একটা ফসলের জেনােম তিনি বের করেন। যদিও প্রজেক্টার কথা পরে আর কখনাে শুনিনি।
তবে এসব ছাড়াও তাঁকে যে বিস্তর চেনার রয়েছে সেটা তাঁর সাথে পরিচয় না হলে আমার বা আপনারা যারা আমার লেখাটা পড়ছেন- কারােরই হয়তাে জানা হতাে না। (Dr. Kijil Praromvo PDF Download)
তাহলে এবার সেদিনের ঘটনায় আসা যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে আমি যখন মােটামুটি প্রস্তুত কর্মময় জীবনের জন্য ঠিক এমন সময়ই আবার সেই কিজিলের নামটা চোখে পড়লাে নামটার মধ্যে কী একটা ব্যাপার ছিল বলে আমি ভুলতে পারিনি, পত্রিকায় একটা বিজ্ঞাপনে চোখ আটকে গেল। রিসার্চ অ্যাসিটেন্ট, কন্ট্রাকচুয়াল, জুওলজিতে স্নাতক প্রার্থী, জরুরি। আগামীকাল সকাল ৮ টায় ইন্টারভিউ, ঠিকানা আর নীচে বিজ্ঞাপন- দাতার নাম ‘ড. কিজিল’। আমি চট করে মনস্থির করে ফেললাম, ইন্টারভিউটা আমি দেব।
সিদ্ধান্তটা ভুল ছিল না ঠিক ছিল এখনাে জানি না, তবে সেটা আমার জীবনটা পাল্টে দিয়েছে এটা সত্যি।
পরদিন ভােরবেলা রিকশা করে বেরিয়েছি। সময়টা জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে, শীতটা কমে যাওয়ার কথা থাকলেও সেদিন বেশ জাঁকিয়ে পড়েছে, রাস্তায় ঘন কুয়াশা। হঠাৎ মানিক মিয়া এভিনিউর কাছে একটা অস্বাভাবিক ব্যাপার চোখে পড়লাে। শীতের সকালে এমনিতে রাস্তায় মানুষজন কম, তারপর আবার কুয়াশায় ভালােমতাে কিছুই চোখে পড়ে না। দেখি রাস্তায় বিশাল আকৃতির একটা হাতি, সম্ভবত এটা আফ্রিকান হাতি, এশিয়ান হাতির আকৃতি আরেকটু ছােট হয়, অবশ্য এত কুয়াশা ছিল ভালােমতাে বুঝতে পারছিলাম না। চার-পাঁচ হাত সামনের দৃশ্যও পরিষ্কার না। রাস্তাঘাটে হাতি থাকতেই পারে, কিন্তু সমস্যা ছিল অন্য জায়গায়, হাতিটা ওর গুড় দিয়ে একটা ছেলেকে পেঁচিয়ে ধরে শূন্যে তুলে রেখেছে। ছেলেটা মনে হয় ভড়কে গিয়ে হাত-পা ছােড়াছুড়ির কথাও ভুলে গেছে।
পাহাড়ি অঞ্চলে শুনেছি মাঝেমধ্যে বুনাে হাতি মানুষের উপর চড়াও হয়। শহুরে হাতিরা মানুষের উপর এতটা খ্যাপার কথা না যে শুড় দিয়ে পেঁচিয়ে ধরবে, তাছাড়া হাতির আক্রমণ কৌশল আমার জানা আছে, এটা সেরকম মনে হচ্ছে না। হঠাৎ হাতির পাশে দাঁড়ানাে আরেকজনকে আমার চোখে পড়লাে, গায়ে জগিং স্যুট, বয়স চল্লিশের মতাে হবে- এবং অবাক হয়ে লক্ষ করলাম লােকটা অসহায় ছেলেটার নাক বরাবর একটা ঘুসি বসিয়ে দিলাে।
আমার তখন বুঝতে একটুও সময় লাগলাে না যে হাতিটা লােকটার পােষা, তার হাতের ইশারায় ছেলেটাকে শূন্যে ঝুলিয়ে রেখেছে। তারপর যেটা হলাে সেটার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না, লােকটা কী এক ইশারা করতেই হাতিটা ছেলেটাকে একপাক ঘুরিয়ে ছুড়ে মারলাে মাথার উপর দিয়ে, পাশেই ছিল লেক- ছেলেটা ঝপাং করে সেই লেকের পানিতে গিয়ে পড়লাে।
পুরাে ব্যাপারটা চোখে দেখার পর আমার কর্তব্য ছিল রিকশাওয়ালাকে তাড়া লাগানাে। যাতে সে দ্রুত চালিয়ে চলে যায় …
নোটঃ কপিরাইটের কারণে বইটি Dr. Kijil Prarambha PDF ডাউনলোড নাও হতে পারে। সাময়িক এই সমস্যার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। alert-warning