ইতিহাসের স্বপ্নভঙ্গ | itihaser shopno vongo pdf

 


বুকস রিভিউঃ হিটলারের আত্মহত্যা কিংবা অদৃশ্য হয়ে যাবার ঠিক সতেরো দিন পর জার্মানি বিনা শর্তে আত্মসমর্পণ করে মিত্রশক্তি বাহিনীর কাছে। জার্মান জাতি সারা পৃথিবীতে প্রভুত্ব করবে, এই স্বপ্নে তাদের মাতিয়ে তুলেছিল হিটলার। কিন্তু পরাজয়ের পর জার্মান রাষ্ট্রের অস্তিত্বই মুছে গেল। আমেরিকা, গ্রেট ব্রিটেন, ফ্রান্স ও সোভিয়েত ইউনিয়ন দেশটাকে ভাগাভাগি করে নিজেদের দখলে রাখল। যুদ্ধ শেষ হবার সঙ্গে সঙ্গেই মিত্র শক্তির কেউ আর কারু মিত্র নয়, তাদের মধ্যে মতভেদ প্রকট ।

চার বছর বাদে, আমেরিকা-ব্রিটেন-ফ্রান্সের অধিকৃত অংশে প্রতিষ্ঠিত হল একটি নতুন রাষ্ট্র, ফেডারাল রিপাবলিক অফ জার্মানি, রাজধানী হল বন্। তার এক মাসের মধ্যেই সোভিয়েত ইউনিয়নের দখলীকৃত অংশে জন্ম নিল জার্মান ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক, রাজধানী হল দ্বিখণ্ডিত বার্লিন শহরের একটি অংশে। বার্লিনের অপর অংশে পশ্চিমী ত্রিশক্তির সৈন্যবাহিনী বসে রইল তাঁবু গেড়ে। একই সংস্কৃতি ও ভাষার উত্তরাধিকারী জার্মানরা দু’ভাগ হয়ে গেল পরের ইচ্ছেয় ।

১৯৫২ সালে স্টালিন একটা প্রস্তাব দিয়েছিলেন বটে যে সামরিক ও রাজনৈতিক ব্যাপারে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ থাকার শর্ত আরোপ করে দুই জার্মানিকে এক করা যেতে পারে, কিন্তু আমেরিকা তাতে রাজি হল না। সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে টক্কর দেবার জন্য পশ্চিম জার্মানিতে তাদের একটি ঘাঁটির খুবই প্রয়োজন, কেননা, এর আগে সোভিয়েত

ইতিহাসের স্বপ্নভঙ্গ pdf download

ইউনিয়ন একবার আচমকা বার্লিন ব্লকেড করে পশ্চিম বার্লিনের সৈন্য ও সাধারণ মানুষদের না খাইয়ে রাখার উপক্রম করেছিল, তখন বিমানে খাদ্য সরবরাহ করতে হয়েছিল দিনের পর দিন । এক জাতি দু’ভাগ হয়ে গেল, দুটি আলাদা রাষ্ট্র। ভারতবর্ষও দ্বিধাবিভক্ত হয়েছিল প্রভুদের ইচ্ছেয়, কিন্তু তার মূলে ছিল অন্তঃকলহ। আমাদের দেশের নেতা বা জনপ্রতিনিধিরা এক যোগে গলা মিলিয়ে বলতে পারেননি যে, না, আমরা দেশ বিভাগ মানব না। হিটলারের পাপে জার্মানি তখন অপরাধবোধে নতশির। তাদের কিছুই বলার মতন মুখ ছিল না।

পশ্চিম জার্মানি হল পশ্চিমী শক্তির তল্পিবাহক, পূর্ব জার্মানি গ্রহণ করল সমাজতন্ত্র। পশ্চিম জার্মানিকে প্রথম কয়েক বছর নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল, তার মধ্যে অন্যতম হল উদ্বাস্তু সমস্যা। পোল্যাণ্ড এবং কাছাকাছি অন্যান্য দেশে যত জার্মান ছিল, তারা বিতাড়িত হয়ে ফিরে আসতে লাগল।

ভাগাভাগির পর পূর্ব জার্মানি থেকেও দলে দলে লোক চলে আসতে শুরু করল পশ্চিমে। অবশ্য এই সব উদ্বাস্তুরা দেশ গড়ার কাজে সাহায্যও করেছে । এরা প্রায় সকলেই দক্ষ শ্রমিক বা প্রযুক্তিবিদ । যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশে যখন সক্ষম পুরুষ মানুষেরই প্রচণ্ড অভাব, তখন এই সব সুশিক্ষিত কর্মীরা দেশের বোঝার বদলে সম্পদ হিসেবেই গণ্য হল। প্রায় একটি ধ্বংসস্তূপ থেকে কী ভাবে আবার জার্মানরা দেশটাকে গড়ে তুলল,, তা আমাদের পক্ষে কল্পনা করাও শক্ত ।

আমরা অবহেলা ও ঔদাসীন্যে এমনই অভ্যস্ত হয়ে গেছি যে গত পঁয়তাল্লিশ বছরে কলকাতা শহরটার অবস্থা কত যে খারাপ হয়ে গেছে, তা আমরা গ্রাহ্যও করি না। ফ্রাঙ্কফুর্ট শহরটা যুদ্ধের সময় নব্বইভাগই ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল, সেই ছবি আমি দেখেছি, আজ সেই আধুনিক শহরটি দেখলে চোখ ধাঁধিয়ে যায়। শুধু জামানি নয়, সোভিয়েত ইউনিয়ান, পোল্যাণ্ড, হাঙ্গেরি ইত্যাদি দেশের অনেক শহরেরই পুনর্জন্ম হয়েছে।…(বই থেকে কিছু অংশ)

 itihaser shopno vongo pdf, ডাউনলোড করুণ

Comming Soon.

বইঃ ইতিহাসের স্বপ্নভঙ্গ ৷

লেখকঃ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় (নীললোহিত) ৷

প্রকাশনীঃ আনন্দ পাবলিশার্স (ভারত) ৷

ক্যাটাগরিঃ পশ্চিমবঙ্গের বই ৷

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন