একবার এক গজ দাঁতওয়ালা সুন্দরীর প্রেমে পড়েছিলাম। তাকে যখন এই সুসংবাদটি দেয়া হলো, তিনি অত্যন্ত নিমর্মভাবে আমাকে প্রত্যাখান করেছিলেন।
..ভূমিকা থেকে নেওয়া ৷
গজদন্তিনী উপন্যাসটি সেই সুন্দরীর উপর নেয়া আমার মধুর প্রতিশোধ হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
গজদন্তিনী যোবায়েদ আহসান pdf download
দুপুরের খাবার খেয়ে বিছানায় শুয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করছে অস্ত্র। ঘুম আসছে না।
অন্তুর দৃঢ় বিশ্বাস, ছুটির দিনের দুপুরবেলায় না ঘুমানোটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু এপ্রিল মাসের প্রচণ্ড গরমের কারণে তাকে সেই অপরাধটাই করতে হচ্ছে।
তার ঘরে একটা ফ্যান আছে – কিন্তু সেটা তেরো দিন ধরে নষ্ট। ফ্যানের একজন মেকানিক ডেকে আনা হয়েছিল- তিনি দেখে শুনে ফ্যানের ডেথ সার্টিফিকেট দিয়ে গেছেন। নতুন ফ্যান কিনতে হবে।
পকেটে টাকা নেই বলে নতুন ফ্যান কেনা হচ্ছে না। অফিসে এ মাসের স্যালারি হতে দেরি হচ্ছে – পেলেই নতুন একটা ফ্যান কেনার ইচ্ছে আছে অন্তর।
সবচেয়ে ভালো হতো যদি একটা এসি কিনে ফেলা যেত – কিন্তু অন্তুর বেতনের অংক এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থা এসির সাথে মোটেও সমাঞ্জস্যপূর্ণ নয়। একটা ফ্যান কেনার জন্য যাকে স্যালারির জন্য অপেক্ষা করতে হয়, তার জন্য এসি কেনার কথা ভাবা শুধু অন্যায়ই না, মহা-অন্যায়।
আর তাছাড়া একজন আশ্রিতের রুমে এসি মানায় না। আশ্রিতের জীবন হতে হয় সাদামাটা। এই মুহূর্তে অন্তুর বসবাস তার বোনের বাসায় সাদামাটাভাবে যাকে আশ্রিতই বলা যায় ।
অন্তুর বাবা মারা গিয়েছিল সেই ছোটবেলায়। আট বছর আগে মাও হুট্ করে মরে গেলেন। মা মারা যাবার পর থেকেই বোনের বাসায় জায়গা হয়েছে তার।
দুলাভাই যে খুব একটা খুশিমনে তার বাড়িতে অন্তুকে জায়গা দিয়েছেন তা না। শুধুমাত্র বৌয়ের মন রাখতে তাকে রাজি হতে হয়েছে। সময় সুযোগ পেলেই একটা খোঁটা দিয়ে অন্তুকে মনে করিয়ে দিতে তার ভুল হয় না যে, অন্তু উনার আশ্রিত।
শুধু আশ্রয় দিয়েছেন তা নয়, এমনকি অন্তু স্বল্প বেতনের যে চাকরিটা করছে, সেটাও হয়েছে তার দুলাভাইয়ের অনুরোধেই। উনারই এক বন্ধুর ফার্মে। তাই মাঝে মাঝে খোঁটা দিয়ে কথা বলা স্বত্বেও এই দুলাভাইয়ের প্রতি অন্তু বেশ কৃতজ্ঞ।
অবশ্য অস্ত্র মোটামুটি নিশ্চিত, তার রুমের ফ্যানটা যে নষ্ট এটা তার বোন লিপি আপার চোখে পড়লে সমস্যার সমাধান হয়ে যেত। কিন্তু ব্যাপারটা লিপি আপার চোখে এখনো পড়েনি। অন্তুর ঘরে তার আপা বা পরিবারের কেউই তেমন একটা আসে না। পরিবারের একজন আশ্রিতের রুমে কারো না আসলেও চলে। ঘুমানোর চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায়, অস্ত্র বালিশের পাশে রাখা একটা বই টেনে নিলো। একটা কবিতার বই। অনেকদিন থেকেই অন্তুর বালিশের পাশে রাখা আছে – পড়া হয় নাই। গত ফেব্রুয়ারিতে বইটা তাকে গিফট করেছিলেন – তার কলিগ সাখাওয়াত ভাই ।
সাখাওয়াত ভাই কোনোদিনই কবিতা পড়েন না- কবিতাতে তার বিন্দুমাত্র আগ্রহও নেই। তার আগ্রহ চাপাবাজিতে। চাপাবাজিতে যদি কোনো বিশ্ব র্যাঙ্কিং থাকত তাহলে তিনি এই র্যাঙ্কিং এর এক নম্বর অবস্থানে থাকতেন । অফিসে অন্তুরা সবাই তাকে ‘চাপাবাজ আল হাসান’ বলে ডাকে । সাখাওয়াত ভাইয়ের সাথে অন্তর যে সম্পর্ক তাতে অন্তুকে তার কবিতার বই গিফট করার কোনো কারণ নেই।
অন্তুর ধারণা তিনি বই মেলায় কোনো স্টলের সামনে গিয়ে কবিতা নিয়ে চাপাবাজি করছিলেন। হয়তো এত বেশি কবিতা জ্ঞান ঝেড়ে ফেলেছিলেন, যে কবি স্বয়ং এসে যখন বইটি তার দিকে এগিয়ে দিয়েছেন তখন আর না করতে পারেননি। একজন সুন্দরী মহিলা কবিকে না-করার মতো হিম্মত সাখাওয়াত ভাইয়ের হবে না। উনি ঠেলায় পড়ে বইটা কিনেছেন। ঠেলায় পড়ে কেনা বই কেউ নিজের কাছে রেখে দেয় না।…(বই থেকে কিছু অংশ)
Gazdantini Pdf Book, ডাউনলোড করুণ
Comming soon.
বইটির পিডিএফ লিংক অনলাইনে খুজে পাওয়া যায় নি ৷ আমাদের সাথেই থাকুন, পিডিএফ পেলে দ্রুত আপনাদের সাথে শেয়ার করবো ৷ ততোক্ষনে ইচ্ছা হলে বইটি অনলাইন থেকে ক্রয় করে পড়তে পারেন ৷ রকমারিতে বইটির মূল্য মাত্র ৩০১ টাকা ৷
- বইঃ গজদন্তিনী ৷
- লেখকঃ যোবায়েদ আহসান ৷
- প্রকাশনীঃ নয়া উদ্যোগ ৷
- ক্যাটাগরিঃ সমকালীন উপন্যাস বই ৷
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন