BitTorrent হলো একটি ইন্টারনেট প্রটোকল, যার মাধ্যমে বড় আকারের ফাইল পিয়ার টু পিয়ার দ্রুত ও খুব সহজে শেয়ার করা যায়। BitTorrent তৈরি করেছিল ব্রাম কোহেল। ব্রাম কোহেল বাফেলো ইউনিভার্সি থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে গ্র্যাজুয়েট সম্পন্ন করেছে।
Bitorrent কিভাবে কাজ করে?
আমরা যখন ইন্টারনেট থেকে কোন ফাইল ডাউনলোড করি সেই ফাইলটা নির্দিষ্ট যে সার্ভারে সংরক্ষিত সেখান থেকে আমাদের ডিভাইসে ডাউনলোড হয়। তাই এখানে অনেক সীমাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। যেমন বড় কোনো ফাইল ডাউনলোড করতে গেলে ধীরগতি বা ডাউনলোডের মাঝখানে ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন জনিত সমস্যা হলে ফাইলটি পুনরায় প্রথম থেকে ডাউনলোড করতে হয়, এরকম আরো অনেক সীমাবদ্ধতা থাকে।
এই সমস্যা গুলোকেই সমাধান করার উদ্দেশ্যে টরেন্টের সৃষ্টি। টরেন্টের মাধ্যমে যে ফাইল গুলো ডাউনলোড করা হয় সেগুলো নির্দিষ্ট কোন সার্ভারে সংরক্ষিত থাকে না৷ এই ফাইলগুলো মুলত সকল টরেন্ট ব্যবহারকারীদের ডিভাইস থেকে সরাসরি আমাদের ডিভাইসে ডাউনলোড হয়, যারা ওই একই ফাইল গুলো তাদের ডিভাইসে আগে থেকেই ডাউনলোড করে রেখেছে।
এর মানে হচ্ছে আমরা যখন কোন ফাইল টরেন্ট ব্যবহার করে ডাউনলোড করি, তখন অন্য কোন ব্যবহারকারী যখন সেই একই ফাইল ডাউনলোড করবে তখন সে আমাদের ডিভাইস থেকেও সেই ফাইলের কিছু অংশ ডাউনলোড করবে। ডাউনলোডকারী একটি ফাইল একই সাথে অনেকগুলো ডিভাইস থেকে ডাউনলোড করছে ফলে সে ফাইলটি খুব দ্রুত গতিতে ডাউনলোড করতে পারবে। যেকারণে এখানে তেমন কোন সীমাবদ্ধতাও তৈরি হচ্ছেনা। মূলত টরেন্ট তৈরিই করা হয়েছে বড় ফাইল ঝামেলাহীন ভাবে শেয়ার করার জন্য।
যেহেতু BitTorrent ব্যবহার করে আমরা বড় একটি ফাইল ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে বিভক্ত করে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর কাছ থেকে ডাউনলোড করি তাই ডাউনলোডের মাঝ পথে ইন্টারনেট জনিত সমস্যা বা কোন কারনে যদি ডিভাইস বন্ধ করে রাখতে হয় তবুও কোন সমস্যা সৃষ্টি হয়না। কারণ যতটুকু ফাইল আমাদের ডিভাইসে ডাউনলোড হয়েছে পরবর্তীতে সেই ফাইলের বাকি অংশ টুকুই আবার BitTorrent ডাউনলোড করবে। এভাবে আমরা পুরো ফাইলটি পেয়ে যাচ্ছি।
BitTorrent থেকে কোন ফাইল ডাউনলোডের সময় এখানে সব সময় ২ টা পক্ষ তৈরি হয়। যে ডাউনলোড করছে তাকে প্রথম পক্ষ বলে। আর যার কাছে থেকে ডাউনলোড হচ্ছে বা আপলোড হচ্ছে সে হচ্ছে দ্বিতীয় পক্ষ। প্রথম পক্ষকে বলা হয় লিচার (LEECHER) এবং দ্বিতীয় পক্ষকে বলা হয় সিডার (SEEDER). এখান থেকে একটা বিষয় বোঝা যাচ্ছে যে, টরেন্ট হচ্ছে এমন একটি সিস্টেম যে সিস্টেম সিডারস এবং লিচারসদের কে পরিচয় করিয়ে দেয়, এবং পরিচয়ের মাধ্যমে ফাইলগুলো নিজেরদের মধ্যে আদানপ্রদান করে। যেই ফাইল গুলোর সিডার বেশি থাকবে সেই ফাইল গুলো তত বেশি স্পিডে ডাউনলোড করা যাবে। মানে হচ্ছে কোন ব্যবহারকারী যখন কোন ফাইলের লোকেশন যুক্ত ইনফরমেশন টরেন্টকে দেয় তখন সেই ফাইলটি কেউ ডাউনলোড করলে ধীরগতিতে সেটি ডাউনলোড হবে কারণ ফাইলটি মাত্র একজন সিড করছে বা সেই ফাইলের একজন মাত্র সিডার রয়েছে, তবে সেই ব্যক্তি ডাউনলোড হয়ে গেলে তখন ২ জন সিডার হবে এভাবে যখন অনেক ব্যবহারকারী সেই একই ফাইল ডাউনলোড করে ফেলবে তখন সিডারের সংখ্যা আরো বেশি হয়ে যাবে, আর তখন সেই ফাইলটি কেউ ডাউনলোড করতে গেলে তার ডাউনলোড স্পিড অনেক বেশি হবে, কারণ তখন ফাইলটি ভাগ ভাগ হয়ে সব গুলো সিডারের থেকে একই সাথে ডাউনলোড হবে। এভাবে ভাগ ভাগ করে ফাইল গুলোকে বিভিন্ন ডিভাইস থেকে ডাউনলোড করার কারণেই এর নাম দেওয়া হয়েছে BitTorrent.
BitTorrent এ আরো একটি বিষয় রয়েছে সেটি হচ্ছে সিডার এবং লিচারদের মধ্যে অনুপাত। কোন ফাইলের লিচার (যে ডাউনলোড করছে) অপেক্ষা যদি সিডার (যার কাছ থেকে ডাউনলোড হচ্ছে বা আপলোড হচ্ছে) বেশি থাকে তাহলে সে ফাইলটি অনেক বেশি স্পীডে ডাউনলোড করা যাবে। আর যে ফাইলের সিডার অপেক্ষা লিচার বেশি হবে সে ফাইলের স্পীড কম পাওয়া যাবে, কারন সেই ফাইল অনেক বেশি ব্যবহারকারী মিলে কম সংখ্যক ব্যবহারকারীদের থেকে ডাউনলোড করছে। তাই BitTorrent এ কোন ফাইল ডাউনলোড দেওয়ার পূর্বে সিডার এবং লিচারের মধ্যে অনুপাত দেখে নিতে হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন