eSIM কী? কিভাবে কাজ করে? এর সুবিধা ও অসুবিধা

বর্তমান টেকনোলজির দুনিয়ায় একটি নতুন প্রযুক্তি হলো eSIM কার্ড। ধারণা করা হচ্ছে eSIM কার্ড একটি বিরাট পরিবর্তনের সূচনা করবে। eSIM কী? কিভাবে কাজ করে? এর সুবিধা ও অসুবিধা নিয়েই আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে।


eSIM কার্ড কী?

eSIM কার্ড এর পূর্ণরুপ হলো Embedded SIM Card (এম্বেডেড সিম কার্ড) আমাদের ফোনে থাকা ট্রাডিশনাল (এক্সটার্নাল) সিম কার্ড যে প্রযুক্তিতে কাজ করে ঠিক একইভাবে eSIM কার্ড ও কাজ করে থাকে। eSIM গুলো সাধারণ যেকোনো ট্রাডিশনাল সিম কার্ডের থেকে ১০ গুণ ছোট হয়ে থাকে।


eSIM কার্ড গুলো অন্যান্য ট্রাডিশনাল সিম কার্ডের মতো করে মোবাইলে ইন্সটল করতে হয় না। স্মার্ট ফোনগুলো তৈরি করার সময় মাদারবোর্ডের সঙ্গে (In built) eSIM চিপ সংযুক্ত করা হয়ে থাকে।


eSIM কী? কিভাবে কাজ করে? এর সুবিধা ও অসুবিধা


কোন কোন ফোনে eSIM সাপোর্ট করে?

eSIM সাপোর্টেড স্মার্টফোন এর লিস্ট https://cutt.ly/yPjQdl7


eSIM কিভাবে কাজ করে?

সাধারণত আমাদের মোবাইল ফোমে যে সিমকার্ড লাগানো হয়, সেটা আসলে একপ্রকার চিপ, যার মধ্যে কিছু ফোন নম্বর ও সিমকার্ডের IMSI (International Mobile Subscriber Identity) সঞ্চিত থাকে।


IMSI হলো একটি ১৫ সংখ্যার নম্বর যা পৃথিবীতে সমস্ত সিমকার্ডের মধ্যে থাকে, এবং এই নম্বরটি প্রত্যেক সিমের জন্য আলাদা আলাদা অর্থাৎ স্বতন্ত্র হয়। যার ফলে প্রত্যেক সিমকার্ড কে আলাদা আলাদা ভাবে সনাক্ত করা যায়। কিন্তু eSIM এর ক্ষেত্রে মোবাইল কোম্পানি ঐরকমই একটি চিপকে মোবাইল মধ্যে তৈরী করার সময়ই লাগিয়ে রাখবে। যার ফলে ওই চিপের মধ্যে সমস্ত রকমের ফোন নম্বর সেভ করে রাখা যাবে এবং ওই eSIM এর চিপকে বার বার রিরাইট করা যাবে।


অর্থাৎ ওই চিপের মধ্যে IMSI নম্বর টি বার বার লিখা ওই চিপের মধ্যে। যার ফলে কেউ যদি সিম চেঞ্জ করতে চায় তাহলে তাকে শুধু ওই IMSI নম্বর এবং সিমকার্ড কোম্পানির দ্বারা দেওয়া তথ্য পূরণ করলে ওই সিমকার্ড চালু হয়ে যাবে।
 
এর ফলে আগের মতো সিম চেঞ্জ করতে বার বার নতুন সিমকার্ড লাগাতে হবে না , যদি কখনও সিমকার্ড চেঞ্জ করার প্রয়োজন হয়, তখন ওই মোবাইলের মধ্যে লাগানো চিপ কে রিরাইট করে সহজেই সিমকার্ড চেঞ্জ করা যাবে।


কেউ eSIM লাগাতে চাইলে, এর জন্য সিমকার্ড অপারেটর কোম্পানির ওয়েবসাইট থেকে নতুন সিমকার্ডের জন্য সমস্ত তথ্য নিতে হবে অথবা সিমকার্ড নেওয়ার জন্য তাদের ফিজিক্যাল স্টোরে যেতে হতে। এরপর, ওই স্টোর থেকে সমস্ত তথ্যগুলো দেওয়া হবে এবং ওই তথ্যগুলো মোবাইলর eSIM এর জায়গায় লিখলেই কোনো ঝামেলা ছাড়াই সিমকার্ড চালু হয়ে যাবে।


eSIM এর সুবিধা:

eSIM এর সুবিধা হলোঃ বর্তমান সময়ে ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস কে আরো অনেক বেশিছোট থেকে ছোট করার চেষ্টা চলছে এবং ওই ছোট ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস এর মধ্যে যত বেশি সম্ভব কাজ করা যায় তারই প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।


তাই যদি ছোটো একটি চিপ মোবাইলের মধ্যে লাগানো থাকে তাহলে অনেক কম জায়গার প্রয়োজন হবে। বাইরে থেকে সিমকার্ড লাগালে অনেক বেশি জায়গা নিয়ে নেয়। তাই এ ক্ষেত্রে eSIM বেশি সুবিধা প্রদান করে।


বিশেষ করে, ছোটো ছোটো ডিভাইস যেমন Smart Watch এ একটি সিমকার্ড লাগানোর জন্য অনেক বেশি জায়গার অপচয় হয়। তাই এ ক্ষেত্রে eSIM ব্যবহার করে ডিভাইস কে অনেক ছোট করা সম্ভব হবে।


এছাড়াও কেউ যদি সিমকার্ড চেঞ্জ করতে চায় তাহলে তাকে আবার নতুন সিমকার্ড লাগাতে হয়, কিন্তু eSIM এর ক্ষেত্রে নতুন কোনো সিমকার্ড লাগাতে হবে না , ঘরে বসেই অনলাইনে মোবাইল অপারেটর কোম্পানির ওয়েবসাইটে রেজিস্টার করে সিমকার্ডের ডিটেলস নিয়ে, ওই ডিটেলস অনুযায়ী eSIM এ রিরাইট করে ফেললেই সহজেই সিমকার্ড চেঞ্জ করা যাবে।


eSIM এর অসুবিধা

eSIM এর অনেক সুবিধা, কিন্তু যদি অসুবিধার কথা বলতেই হয়, যারা খুব বেশি এক সিমকার্ড খুলে অন্য সিমকার্ড লাগায় , তাদের একটু সমস্যা হতে পারে। বারবার তথ্যগুলো রিরাইট করতে হবে।

 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন